সর্বশেষ

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন সোনা আমদানি নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ

/ মদ, বিয়ারসহ ৩৩০ পণ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপের প্রস্তাবমদ, বিয়ারসহ ৩৩০ পণ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব /

প্রকাশ :


২৪খবরবিডি: 'ডলারসংকটে বিলাস পণ্য আমদানিতে আরো লাগাম টানছে সরকার। এর অংশ হিসেবে বিদেশি ফল, স্বর্ণ, মদ, বিয়ার, স্মার্টফোন, গাড়ি, এয়ারকন্ডিশন, রেফ্রিজারেটর, মসলাজাতীয় পণ্যসহ মোট ৩৩০ ধরনের পণ্যের শুল্ক-কর ও ট্যারিফ মূল্য বাড়ানোর মাধ্যমে আমদানি নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)।'

এসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া স্বর্ণালংকার ও স্বর্ণের বার আমদানি নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।প্রতিবেদনে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সাশ্রয় ও আমদানি ব্যয়ে লাগাম টানতে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে ব্যাগেজ রুলের আওতায় স্বর্ণের বার আমদানিতে দুই হাজার টাকা শুল্ক-কর দিতে হয়। এটি বাড়িয়ে তিন হাজার টাকা করার সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি স্মার্টফোন আমদানিতে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের সুপারিশ করা হয়েছে।

 



-আমদানি ব্যয় কমিয়ে অত্যাবশ্যকীয় নয় এমন পণ্যের আমদানি নিয়ন্ত্রণ বা বন্ধ করার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে গত ২০ জুলাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে নির্দেশ দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ট্ যারিফ কমিশন তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে। এ কমিটি যাচাই-বাছাই শেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠায়।

 

নিয়ন্ত্রিত পণ্যের তালিকায় আছে সব ধরনের মদ, বিয়ার, সিগারেট, চুরুট বা তামাকজাতীয় পণ্য, আম, কমলা, ছোট কমলালেবু, তাজা-শুকনা আঙুর, তরমুজ, আপেল, নাশপাতি, পাম ফল, চেরি ফল, স্ট্রবেরি, কিউই ফল, কফি, গ্রিন টি, চা পাতা, গোলমরিচ, দারচিনি, লবঙ্গ, পাস্তা, মিষ্টি বিস্কুট, ওয়েফার, কেক, পাউরুটি, জ্যাম-জেলি, কমলা-আপেলের জুস, সব ধরনের ফলের রস, সয়া সস, টমেটো কেচাপ, স্যুপ, আইসক্রিম, পানি, লবণ, কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম, পাইনবাদাম, সুপারি, খেজুর, ডুমুর ফল আভোকাডো ইত্যাদি। এ ছাড়া রয়েছে প্লাস্টিকের প্লেট, বাথটাব, রান্নাঘরের বেসিন, দরজা-জানালা, হাতব্যাগ, স্যুটকেস, চামড়ার বেল্ট, প্লাস্টিকের বোর্ড, অগ্নিনির্বাপক দরজা, সিগারেট পেপার, সুতির প্যান্ট-শার্টের কাপড়, প্রিন্টেড কাপড়, কার্পেট, থ্রিপিস, হাতে তৈরি লেস, ছাতা, প্লাস্টিকের ফুল, মার্বেল-গ্রানাইট, ইমিটেশন জুয়েলারি, ছাদে ব্যবহৃত টাইলস, সিরামিকের সিংক, বাথরুম ফিটিংস, বাথরুমে ব্যবহত গ্লাসওয়্যার, টেবিলওয়্যার (কাপ-পিরিচ), স্যানিটারি ওয়্যার, রেজর, ব্লেড, ইলেকট্রিক ওয়্যার, সব ধরনের তালা-চাবি, সব ধরনের ফ্যান, এয়ারকন্ডিশনার, ডিপ ফ্রিজ, রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ইলেকট্রিক ওভেন, হোম অ্যাপ্লায়েন্স সামগ্রী, স্মার্টফোন, স্পিকার, সব ধরনের ব্যক্তিগত গাড়ি, সাইকেল, দেয়াল ঘড়ি, অ্যালার্ম ঘড়ি, গাড়ির সিট, কাঠের ফার্নিচার, ভিডিও গেম, তাস, টেবিল টেনিস ও টেনিস খেলার সরঞ্জাম, বল (গলফ, টেবিল টেনিস, টেনিস), মাছ ধরার বড়শি ইত্যাদি।


-অন্যদিকে যেসব ভোগ্যপণ্য সমাজের উচ্চ ক্রয়ক্ষমতাসম্পন্ন শ্রেণি ভোগ করে থাকে, সেসব পণ্যের শুল্কহার বৃদ্ধি করার পাশাপাশি প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শুল্কায়নযোগ্য মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এতে আমদানি নিয়ন্ত্রণের ফলে সম্ভাব্য রাজস্ব ক্ষতির প্রভাব কিছুটা হলেও লাঘব হবে।

বাণিজ্য  মন্ত্রণালয়ে  প্রতিবেদন  'সোনা  আমদানি ' নিয়ন্ত্রণের  সুপারিশ

বিশেষ প্রয়োজনে আমদানিযোগ্য পণ্যের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের ভিত্তিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। এতে আরো বলা হয়, বন্ডের মাধ্যমে শতভাগ রপ্তানি খাতের জন্য যে পণ্য আমদানি হয় তা স্থানীয় বাজারে প্রবেশ করলে স্থানীয় শিল্প সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, অন্যদিকে সরকার রাজস্ব হারায়।
 

শুল্ক-কর ও ট্যারিফ মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হলে, অর্থনীতিতে এর সম্ভাব্য কী প্রভাব পড়তে পারে তা-ও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়তে পারে আমদানি পর্যায়ে রাজস্ব কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে। বিদ্যমান পণ্য মজুদের কারণে মূল্যবৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। মিথ্যা ঘোষণা, মিস ডিক্লেয়ারেশন, আন্ডার ইনভয়েসিং ও অন্য অসাধু পন্থায় আমদানি বৃদ্ধির প্রবণতা বাড়তে পারে। অন্যদিকে আমদানি পর্যায়ে শুল্ক-কর ও শুল্কায়নযোগ্য মূল্যবৃদ্ধি করা হলে রাজস্ব সংগ্রহের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে। 'প্রতিবেদনে ট্যারিফ কমিশন ছয়টি সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে আমদানি ব্যয় কমিয়ে আনতে ট্যারিফ কমিশন ৩৩০ আইটেম পণ্যের শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক, নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) ও ট্যারিফ মূল্যবৃদ্ধির সুপারিশ করেছে। বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, গোয়েন্দা সংস্থা, পণ্য সংশ্লিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন এবং এফবিসিসিআই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।

Share

আরো খবর


সর্বাধিক পঠিত